বিশেষ প্রতিনিধি, পূর্ব মেদিনীপুর: পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে এক ব্যক্তির মৃত্যুতে বিতর্কের কেন্দ্রে গ্রাম পঞ্চায়েতের সালিশি ব্যবস্থা। মুম্বাই থেকে ভাইপোর দেহ গ্রামে পাঠাতে প্রয়োজনীয় নথিপত্রে সই করতে হয়েছিল মোহন মণ্ডলকে। সেই কারণে চল্লিশোর্ধ ওই ব্যক্তিকে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। তার জেরেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। ঘটনায় গ্রামে ক্ষোভ এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, কয়েক মাস পূর্বে নন্দকুমারের আলাশুলি গ্রামের ঠিকাদার চন্দন বেরার সঙ্গে মোহন মণ্ডল ও তাঁর ভাইপো শ্যামল মণ্ডল সহ ৬ জন মুম্বাইয়ে গিয়েছিলেন। তারা সকলে ইলেকট্রিকের কাজ করত।
মৃত ব্যক্তির পরিবার জানিয়েছে, প্রায় দুই মাস আগে মুম্বাইয়ে কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান শ্যামল। বাড়িতে দেহ ফিরিয়ে আনতে তখন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে সই করতে হয় তাঁর কাকা মোহন মণ্ডলকে। ওই ঠিকাদার কোনও সহযোগিতা না করায় বাধ্য হয়েই তিনি সই করেছিলেন। তবে শ্যামলের পরিবারের অভিযোগ, ওই ঠিকাদার কোনও কাগজে সই না করায় তার কাছে ক্ষতিপূরণ বাবদ কিছুই তাঁরা দাবি করতে পারছেন না।
মোহন মণ্ডল মুম্বই থেকে বাড়ি ফিরে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। তারপর ১২ জুলাই গ্রামে সালিশি সভা ডাকা হয়। সেখানেই মোহন মণ্ডলকে দোষী সাব্যস্ত করে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা ও তিরস্কার করা হয় কাগজপত্রে সই করার জন্য। এত টাকা দেওয়া অসম্ভব জেনে ১৭ জুলাই শুক্রবার রাতে বাড়ির অনতিদূরে একটি পেয়ারা গাছে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। শনিবার সকালে নন্দকুমার থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য তমলুক জেলা হাসপাতাল পাঠিয়ে দেয়।
আর্থিক জরিমানার কথা স্বীকার করে স্থানীয় ব্যবরতার হাট পশ্চিম পাঁচ নম্বর অঞ্চলের প্রধান স্বপ্না মাঝি বলেন, “সালিশি সভায় মোহন মণ্ডলকে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা নয়, শ্যামল মণ্ডলের পরিবারকে সাহায্য বাবদ সেই টাকা দিতে বলা হয়েছিল।” তবে প্রতিবেশীরা জরিমানার কথাই জানিয়েছেন।