সোমনাথ দত্ত, মালবাজার: মঙ্গলবার রাতে ধূপগুড়ির জলঢাকা সেতু সংলগ্ন এলাকায় ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত ১৪ জনের মধ্যে ৯ জনই মালবাজার ব্লকের। বিয়েবাড়িগামী দুটি ছোট গাড়ির উপর উল্টে পড়ে একটি পাথর বোঝাই ডাম্পার। মর্মান্তিক এই দূর্ঘটনায় মালবাজার ব্লকের ওদলাবাড়ী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রয়েছেন পাঁচজন।
এরা হলেন ওদলাবাড়ী হিন্দী স্কুল পাড়ার রাজেশ মিশ্র(৪০), রেনু মিশ্র( ৩৬), ওদলাবাড়ী দেবীপাড়ার বাসিন্দা অনিতা সিং (৩২), প্রিয়াংকা সিং(১৭) ও রিতিকা সিং(৬)। এছাড়া ব্লকের ডামডিম গ্রাম পঞ্চায়েতের খাগরাবস্তীর বাসিন্দা লক্ষী সিংহ রায়(৬০) ও মেনকা রায়(৪০) এবং রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের বারোঘড়িয়ার দুইজন এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন সুস্মিতা সরকার ওরফে মামনি সরকার( ২২) ও বিরাজ সরকার(২)। এছাড়া আরও দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গেছে ঐদিন ছোট গাড়িতে করে ওদলাবাড়ী ডামডিম হয়ে ধুপগুড়ীতে বৌভাত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন সকলে, প্রত্যেকে ভিন্ন পরিবারের সদস্য হলেও বৈবাহিক সুত্রে নিকট আত্মীয় ছিলেন। নিহত লক্ষী সিংহ রায়ের স্বামী রবি সিংহ রায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। মাঝে মাঝে কাঁদতে কাঁদতে বলছেন, “আমার সব শেষ হয়ে গেল, একা হয়ে গেলাম। ছেলে আছে, সে দেখে না। কিভাবে বাঁচব?” ওদলাবাড়ী দেবীপাড়ার বাসিন্দা ফিরোজ খান ও দিলীপ চৌধুরী বললেন, সিং পরিবারের আর কেউ থাকল না। শেষ হয়ে গেল গোটা পরিবারটি। মৃতদেহ আসলে পাড়ার লোকেরা নিহতদের সৎকার করবে। এইভাবে একটা পরিবার শেষ হয়ে যাবে ভাবা যায় না। এলাকার মানুষজন শোকে মুহ্যমান। এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে ওদলাবাড়ীর আপামোর মানুষ নিহতদের বাড়ীতে গিয়ে শোক ব্যাক্ত করছেন। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন নিহত সুস্মিতা সরকারের স্বামী ও বিরাজ সরকারের বাবা বিপন সরকারও।