পঁচিশে বৈশাখ ও বাইশে শ্রাবণ
অক্ষয় কুমার বৈদ্য
পঁচিশে বৈশাখ তুমি স্বর্ণ অরুণ শুভ জন্মক্ষণ।
বাইশে শ্রাবণ যেন শূন্য প্রান্তরে বিরহী সমীরণ।
পঁচিশে বৈশাখ তুমি তুমি উদয় দিগন্তে শঙ্খ ধ্বনি।
বাইশে শ্রাবণ যেন অস্তসাগর নিভৃত পদধ্বনি।
পঁচিশে বৈশাখ তুমি জাগ্রত নির্মল নূতন প্রাণ।
বাইশে শ্রাবণ যেন নৈঃশব্দ্য বেদনা
বিষণ্ণ গান।
পঁচিশে বৈশাখ তুমি পূরবী রাত্রিশেষে অনন্ত জ্যোতি।
বাইশে শ্রাবণ যেন ম্লান অরন্যছায়া
নিষ্ঠুর ভ্রুকুটি।
পঁচিশে বৈশাখ তুমি মহামানবের হে জ্ঞান তাপস।
বাইশে শ্রাবণ যেন অনিঃশেষ বারিধারা নিখিল উদাস।
পঁচিশে বৈশাখ তুমি গৌরব লীলায়িত অখিল ভূবন।
বাইশে শ্রাবণ যেন একাকী নিশিথিনী দুঃখ বরষণ।
পঁচিশে বৈশাখ তুমি আনন্দ ঊর্মিমালা প্রাণের মেলা।
বাইশে শ্রাবণ যেন ভাঙা হৃদয় সাঙ্গ সকল খেলা।
পঁচিশে বৈশাখ তুমি মুঞ্জরিল অন্তর নূতন প্রভাত।
বাইশে শ্রাবণ যেন বর্ষিল বেদনা বিপুল আঘাত।
পঁচিশে বৈশাখ তুমি রবিকিরণ স্নিগ্ধ অগ্নিশিখা।
বাইশে শ্রাবণ যেন দগ্ধ আঁধার জীবন কুহেলী ঢাকা।
পঁচিশে বৈশাখ শুভ্র দীপ্ত আলোময়
পূণ্যপথ।
বাইশে শ্রাবণ যেন দুঃসহ বেদন বিপন্ন কালের রথ।
পঁচিশে বৈশাখ তুমি তরু ছায়া সৌরভিত আশ্রয়।
বাইশে শ্রাবণ যেন অসহায় অনিকেত, আশঙ্কা ভয়।
পঁচিশে বৈশাখ তুমি অক্ষয় আলো নীহারিকা তারা।
বাইশে শ্রাবণ যেন শুষ্ক শাখায় জীর্ণ পাতা ঝরা।
পঁচিশে বৈশাখ তুমি অসীম তটিনী নীল শতদল।
বাইশে শ্রাবণ যেন অনিঃশেষ মেঘে ভরা বাদল।
পঁচিশে বৈশাখ তুমি মহাসঙ্গীত সৃষ্টির নবারুণ।
বাইশে শ্রাবণ যেন অস্তরবির ছুটির আয়োজন।
পঁচিশে বৈশাখ তুমি পূণ্য দহন আগুনের পরশমণি। বাইশে শ্রাবণ যেন সন্ধ্যানদী জলে বিদায় রাগিণী।
পঁচিশে বৈশাখ কিংবা বাইশে শ্রাবণ।
অন্তর মন্দিরে বিরাজে দেবতা হে মহাজীবন।