নিজস্ব সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: ছেলে বাবার কাছে মোবাইল কিনে দেওয়ার বায়না ধরেছিলো। কিন্তু নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে বাবা বলেছিলেন, লকডাউনে কাজকাম সব বন্ধ। এতো টাকা পাবো কোথায়? উচ্চ মাধ্যমিক পাশ কর, মোবাইল কিনে দেবো। কিন্তু, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আর অপেক্ষা করলোনা ছেলে। বৃহস্পতিবার রাতে মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি মাঠে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে সরি ফুল শেখ নামে এক ছাত্র। শুক্রবার সকালে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হলে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।
পুলিস জানিয়েছে, মৃত ওই ছাত্রের নাম সরিফুল শেখ(১৭)। বাড়ি সাগরদিঘি থানার হরহরি গ্রাম পঞ্চায়েতের পোপাড়ায়। আব্দার মতো মোবাইল না কিনে দেওয়ায় এই আত্মহত্যা বলে জানা গিয়েছে। পুলিস দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
পুলিস ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য বাবার কাছে বায়না ধরেছিলো সে। কিন্তু, উপার্জন না থাকার কারণে বাবা মোবাইল কিনে দিতে পারেননি। সেই অভিমানে বৃহস্পতিবার রাতে, বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে দোগাছি মাঠে গাছে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। সকালে স্থানীয় গ্রামবাসীরা তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। তার দাদা মিসবাউল শেখ বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি ও শ্রমিকের কাজ করে কিছু টাকাও জমিয়েছিল। বাবা চাষবাস করেন। আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। তাই বাবা বলেছিলেন, উচ্চ মাধ্যমিকের পর মোবাইল কিনে দেবো। তাই সে অভিমানে আত্মহত্যা করে। তার এক বন্ধু অশিম আকরাম বলেন, ও খুব শান্তশিষ্ট ভালো ছেলে ছিলো। মোবাইল কেনার জন্য ও শ্রমিকের কাজ করেছে। কিন্তু, বাবা নিষেধ করায় সেও বলে, এখন মোবাইল কিনবোনা। তারপরও সে কেন এমন ঘটনা ঘটলো বুঝতে পারছিনা।