সোমনাথ দত্ত , মালবাজার: ১০দিনের একটি শিশু কন্যাকে চুরি করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ালো ডুয়ার্সের মালবাজার ব্লকের রাঙ্গামাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নিদাম চা বাগানে। শিশুকে চুরি করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় ববি কর্মকার (২৭) নামে এক মহিলাকে। বাড়ি মালবাজার ব্লকের কুমলাই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নেপুচাপুর চাবাগানে।
নিদাম চাবাগানের শ্রমিকদের থেকে জানাগেছে, “কয়েক দিন আগেই অভিযুক্ত ববি কর্মকার নিদাম চা বাগানের রাজকুমার ওরাওঁ নামের এক ব্যাক্তির বাড়িতে আসেন । রাজকুমার বাবুর সাথে অভিযুক্ত ববির পুর্ব পরিচয় ছিল। তার বাড়িতে এসে অভিযুক্ত ববি জানায় যে সে গর্ভবতী এবং বাড়িতে থাকার অসুবিধার জন্য রাজকুমার বাবুর বাড়িতে কয়েকদিন থাকবে।সমস্যার কথা শুনে রাজকুমার বাবু ওই মহিলাকে তার বাড়িতে কিছুদিনের জন্য আশ্রয় দেন। রাজকুমার বাবুর বাড়িতে থাকতে থাকতেই ওই মহিলার সাথে পরিচয় হয় প্রতিবেশী বন্ধন ওরাওঁ এর পরিবারের। বন্ধন ও তার স্ত্রী পুনম ওরাওঁ এর ১০ দিনের একটি কন্যা সন্তান ছিল। বাড়িতে আসা যাওয়ার সুত্রে ববির সাথে বন্ধনের পরিবারের ঘনিষ্ঠতা হয়। দশ দিনের ওই শিশুটিকে কোলে নিয়ে খেলাও চলে। ঘনিষ্ঠতা নিবিড় হতেই বুধবার দুপুরে ববি বন্ধনের স্ত্রী পুনমকে এসে জানায়, “আজ সে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে আর এই সুবাদে সে তাঁদের আমের জুস খাওয়াবে বলে মনস্থির করেছে’।এই বলে একটি পাত্রে জুস ঢেলে পুনম ও পরিবারের বাকি সদস্যদের খেতে দেয়। জুস খাওয়াব কিছু পরেই পুনম ও পরিবারের বাকি সদস্যরা অচৈতন্য হয়ে পড়লে ববি ওই ১০ দিনের শিশুকে নিয়ে এলাকা থেকে চম্পট দেয়।”
এদিকে বিকেলে হুস ফিরলে পুনম দেখে ঘরে তার শিশু কন্যা নেই। আর তখন থেকেই চারিদিকে খোঁজ শুরু করে। সেসময় তার প্রতিবেশীরা জানায় যে ববির কোলে তোয়ালা জরানো তাদের শিশুটিকে দেখেছে। প্রসঙ্গত পুনম ওরাওঁ জানায়, “এরপরই আমি প্রথমে ববিকে ফোন করে আমার সন্তান কোথায় জানতে চাই। সে বলে আমি নিজে গর্ভবতী তোমার বাচ্চাকে আনতে যাব কেন? আমাদের সন্দেহ হতেই আমরা নেপুচাপুর চাবাগানে ববির বাড়িতে যাই। প্রথমে সে স্বীকার করতে চায়নি। পরে ঘরের ভিতর থেকে বাচ্চার কান্না শুনে ভিতরে ঢুকে দেখি আমাদের বাচ্চা তার বিছানায় শোয়ানো রয়েছে। এরপরই আমরা বাচ্চাকে নিয়ে আসি এবং মালবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।”
এবিষয়ে মালবাজার থানার আইসি সুজিত লামা জানান, “লিখিত অভিযোগ হয়েছে, ববি কর্মকার নামে ওই মহিলাকে গ্রেপ্তার করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।”
এই ঘটনায় নিদাম চা বাগান সহ আশেপাশের চাবাগানে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ডুয়ার্সের চাবাগান এলাকা গুলিতে শিশু চুরির কোন চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে কিনা তা নিয়েও শুরু হয়েছে গুঞ্জন।