নিউজপিডিয়া ডেস্ক : আমরা যখন একদিকে বলি দেশ উন্নত হচ্ছে, প্রযুক্তিগত দিক থেকেও এগিয়ে দেশ, সেই সময় অন্যদিকে প্রযুক্তির ছিটেফোঁটাও পাচ্ছেনা কিছু জায়গা। দেশ যতই ডিজিটাল হোক, এখনও অন্ধকারে রয়েছে কিছু জায়গা। তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ নাগাল্যান্ড এর সুরুহু গ্রাম। বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, নেই নেটওয়ার্ক। তাই বাধ্য হয়েই ছাত্রছাত্রীরা পায়ে হেঁটে ৩ কিমি রাস্তা ট্রেক করে অনলাইন ক্লাস বা পরীক্ষা দিতে যায়।
দুই সপ্তাহ ধরে, রোজ আট বছর বয়সের হিভিকা ঝিমোমি নাগাল্যান্ডের জুনেহিতো জেলায় তাঁর গ্রামের একটি ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পাহাড় ভেদ করে পরীক্ষা দিতে যায় পৌঁছায়। সেখানে জঙ্গলে একটি কাঠের উপর বসে অনলাইনে পরীক্ষা দেয়। একজন মডারেটরের স্মার্টফোন থেকে হিভিকা প্রশ্নগুলি সমাধান করে এবং অনলাইনে মডারেটর তা স্কুলে প্রেরণ করেন। প্রত্যন্ত গ্রামের এই জায়গাটি একমাত্র অঞ্চল যা নেটওয়ার্ক সংযোগ গ্রহণ করে। নিকটতম সেল টাওয়ারটি গোখভি গ্রামে, যা পাহাড়ের অপর প্রান্তে ১৫ কিলোমিটার দূরে। হিভিকার বাবা বোভিকা ঝিমোমি বলেছেন, “এটি কঠিন তবে আমাদের এটি করতে হবে”। তিনি আরো বলেন,” গ্রামে নেটওয়ার্ক থাকলে যে কোনো উপায়ে স্মার্টফোন কিনে দিতাম অন্তত ঘরে বসে নিরাপদে পরিক্ষা বা ক্লাস করতে পারতো। কিন্তু এখন জঙ্গলে পাঠাতে হয় অন্যের মোবাইলে পরীক্ষা দিতে”।
হিভিকার মতই গ্রামের প্রচুর ছেলে মেয়ে দুর্গম পথ পেরিয়ে সেই স্থানে গিয়ে পরিক্ষা দেয় বা ক্লাস করে। নাগাল্যান্ডের স্কুল দপ্তরের প্রিন্সিপাল বলেন,” আমাদের অনেক সমস্যা রয়েছে, বিশেষ করে এই জেলায়। করোনা আবহে অফলাইনে সম্ভব নয়। নেটওয়ার্ক নেই। আমাদের একটি স্থায়ী সমাধান চাই”। শিক্ষার্থীরা ঠিক মতো ক্লাসও করতে পারে না। গ্রামের সেই জঙ্গলে নেটওয়ার্ক থাকলেও সবসময় থাকে না। ফলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক দের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে না। পড়াশোনাটাও ঠিকমতো হয় না।
সুরুহ গ্রামের ছাত্র সংগঠনের সভাপতি লুকা ঝিমমি বলেন,” এখানে শিক্ষার্থীদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। নেট কানেকশন না থাকায় নোট ও জোগাড় করা যায় না। পরীক্ষা তো দূর। এই পরিস্থিতিতে যখন অনলাইন ক্লাস বা পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানানো হয়, স্বাভাবিকভাবেই অভিভাবকরা খুবই অবাক হয়েছিল”।