শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক গঠন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ অশোক ভট্টাচার্যের
বিশেষ সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: চলতি মে মাসের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। বর্তমান সঙ্কটময় সময়ে তাই রাজ্যের ৮৫ টি পুরসভায় প্রশাসক বসানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে কলকাতা পুরসভায় সম্পন্ন হয়েছে প্রশাসক গঠনের কাজ। নবান্ন সূত্রের খবর, রাজ্যের শাসকদলের নেতৃত্বে থাকা পুরসভাগুলিতে প্রশাসক পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদেরই কাজের হিসেব অনুযায়ী বসানো হবে। সেই নিয়মেই শুক্রবার রাজ্যের পুর ও নগরোয়ান্নয়ন দফতর এক নির্দেশিকায় শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক পদে বাম নেতা অশোক ভট্টাচার্যকে নতুন প্রশাসক হিসেবে ঘোষণা করে। তবে অশোক বাবু ওই নির্দেশের পর ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। তিনি লিখিত বিবৃতিতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে জানিয়েছেন, ”বিজ্ঞপ্তিতে আমাকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে এবং আরও ৬ জনকে বর্তমান প্রশাসকের সদস্য করা হয়েছে। কিন্তু সেইসঙ্গেই তৃণমূল কংগ্রেসের ৫ জন কাউন্সিলরকে এই প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য করা হয়েছে।
অথচ কলকাতা সহ বিভিন্ন পুরসভায় প্রশাসকগুলিতে এখনও পর্যন্ত কোথাও বিরোধী দলের কাউকে রাখা হয়নি। তাহলে শিলিগুড়ির ক্ষেত্রে এই ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত কেন?” তিনি আরো জানিয়েছেন, ”বিগত ৫ বছর ধরে শিলিগুড়ির উন্নয়নে বাধা সৃষ্টিকারী তৃণমূল কংগ্রেস ও তার কাউন্সিলরদেরকে প্রশাসক মন্ডলীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তিনি প্ৰশ্ন তুলেছেন রাজ্য সরকারের এহেন নির্দেশনামার ‘আসল উদ্দেশ্য’ নিয়ে। রাজ্য সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে ‘অনৈতিক, অগণতান্ত্রিক এবং শিলিগুড়ির মানুষের প্রতি অপমানকর’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। উত্তরবঙ্গের এই বাম নেতা মনে করেন, সরকার করোনা ভাইরাস মোকাবিলার আড়ালে সংকীর্ণ রাজনীতি করছেন এবং প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ করছে। তিনি আরও জানান, ‘আমরা রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও প্রত্যাখ্যান করছি। সেইসঙ্গে অন্যান্য পুরসভায় যে নিয়ম মানা হয়েছে, এই ক্ষেত্রে তাই অনুসরণ করা হোক।’
উল্লেখ্য, ১৭ মে শিলিগুড়ির পুরসভার বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে, আর সেখানে বর্তমান মেয়র সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্যকেই প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য দাবি করেছিলেন, ‘কলকাতা পুরসভার ন্যায় সব পুরসভারগুলোর ক্ষেত্রে একই নিয়ম হওয়া উচিৎ।’ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘শিলিগুড়ি কি রাজ্যের বাইরে? এখানকার নাগরিকরা কি দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক?’
তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, বিরোধী নিয়ন্ত্রিত পুরসভাগুলিতে প্রশাসক পদে আমলাদের বসানোর কথা ভাবা হলেও বিতর্ক সৃষ্টির সম্ভাবনার কারণে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। যদিও শিলিগুড়ির ক্ষেত্রে বর্তমান মেয়রকেই প্রশাসকের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে।