রবিউল হোসেন: ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে গোষ্ঠী বিবাদে হেরে গেছে চিন। এই হারের ফলে কম দামে ভালো মানের পণ্য বিক্রির যে বৈদেশিক নীতি ছিল তা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেলো। এর সাথে সাথে বিশ্ব বানিজ্য সংস্থায় চীনের যে একটা প্রভাব ছিল সেটাও বিনষ্ট হলো।
বিগত চার বছর নিজেদের ইকোনমিক মার্কেটকে প্রাধান্য দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বরাবর চাপ দিয়ে আসছিল চিন। সেই প্রেক্ষিতে তারা ২০১৬ সালে একটি মামলা করে। কিন্তু গত বছর সেই অভ্যন্তরীণ মামলার রায় চিনের বিরুদ্ধে যেতেই চীনের এই বিপত্তি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতে, চীন তাদের উৎপাদিত পণ্যে বিশেষ করে স্টিল এবং অ্যালুমিনিয়ামে ভালো ভর্তুকি দেয়। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে চীনের উৎপাদিত পণ্যের দাম অনেক কম থাকে। মামলায় হেরে যাওয়ায় চীনের পণ্যে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টি–ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করতে পারবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র। স্বাভাবিক দামের চেয়ে কম দামে কোনো পণ্য রপ্তানি করলে তাকে ডাম্পিং বলে গণ্য করতে পারে আমদানিকারক দেশ। এ ক্ষেত্রে তদন্ত করে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করা যায়।
উল্লেখ্য, চীনের ব্যাবসার মূল নীতি হল তারা তারা কম দামের জিনিস গুলো প্রচুর পরিমাণে মজুত করে ফলে সেই দেশের রপ্তানিকারকরা এবং ছোট মজুতদারেরা প্রচুর পরিমাণে ক্ষতির সম্মুখীন হন। এছাডাও তারা নিজেদের কমদামী জিনিসগুলো কোনো দেশে জমা করার পর চাহিদা অনুযায়ী বিপুল সংখ্যক হারে বাজারে ছেড়ে দেয়। তাতে করে সে দেশের বাজার চীনা সামগ্রীতে ভরে যায়।
কিন্তু এবার চীনের তৈরি পণ্যে আন্টি ডাম্পিং শুল্ক চাপিয়ে সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এতে করে একদিকে যেমন তাদের দেশীও পণ্যের মান ও দাম উভয়ে ঠিক থাকবে ঠিক তেমনি অন্যদিকে চীনের তৈরি পণ্যের উপর রাশ টানা যাবে। মামলার সাথে যুক্ত এক ইউনিয়ন কর্মকর্তা জানান, এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে চীন বৈদেশিক বাণিজ্য ত্বরান্বিত করতে অনেক কিছু খোয়ালো, এতে করে চীনের পণ্যের চাহিদা গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়নে মুখ থুবরে পড়বে।