
ফিরোজ হক: করোনা সংক্রমণের দরুণ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা এখনও শেষ হয়নি। শিক্ষা দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের বাকি পরীক্ষাগুলি নেওয়া হবে জুন মাসে। কিন্তু এর মধ্যেই এক মনখারাপের দৃশ্য উঠে আসল মালবাজারের ঘড়ি মোড়ে।
মালবাজার আদর্শ বিদ্যাভবনের প্রথম স্থানাধিকারী অয়ন সেন মালবাজারের ঘড়ি মোড়ে বস্তা পেতে ডিমের দোকান করছে। অয়নকে আদর্শ বিদ্যাভবনের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা, মালবাজারের স্থানীয় মানুষ বাদেও অনেকে চিনে। তাই অয়ন ডিম বিক্রি করার সময় ক্রেতাদের মুখের দিকে তাকাতে ইতস্তত বোধ করে।
এই সময়ে যেখানে অন্যান্য উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বসে বই পড়ছে অয়নকে সেখানে সংসারের বোঝা টানার জন্য করতে হচ্ছে ডিমের দোকান। সেইসঙ্গে অয়ন বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। কিন্তু অভাবের তাড়নায় নিজের স্বপ্নকে গুটিয়ে রেখেছে অয়ন। অয়ন নিজেও জানিয়েছে, “বাড়িতে বসে পড়লে ভালো ফল করতে পারতাম।” কিন্তু এর বেশি কিছুই বলতে পারেনি অয়ন।
অয়নের বাবা দীনেশবাবু দর্জির কাজ করে সংসার চালান। কিন্তু লকডাউনের দরুণ একসপ্তাহের মধ্যেই দীনেশবাবুকে মেশিনের কাজ বন্ধ করে আনাজের ব্যবসায় নামতে হয়। আনাজের দোকান বৃদ্ধি হওয়ায় প্রতিযোগীতা বৃদ্ধি পায়। তাই স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মনক্ষুন্ন করে। দীনেশবাবুর চাপ বাড়তে থাকে। তারপরেই অয়ন বস্তা পেতে ডিম বিক্রি করতে বসে যায়।
দীনেশবাবুকে ত্রাণের কথা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, “ত্রাণ পেয়েছি। তা দিয়ে এক-দুদিন যায়।… ছেলে রাস্তায় বসে ডিম বেচবে, এটা কোনও দিনই চাইনি।”
আদর্শ বিদ্যাভবনের প্রধান শিক্ষক উৎপল পাল জানান, ‘‘অয়নের মতো ছাত্রকে অভাবের তাড়নায় দোকান দিতে হচ্ছে, এটা শোনাও দুর্ভাগ্যের। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’