
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, দ্য থার্ড আই, ১২ এপ্রিল
রবিউল হোসেন: করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে বিশ্ব জুড়ে খাদ্য সরবরাহে হুমকি তৈরি হয়েছে। বহু দেশ লকডাউনে থাকায় সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এক প্রতিবেদনে সম্প্রতি এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
এফএওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে সুপারমার্কেটের তাকগুলো পূর্ণ রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘায়িত মহামারি সংকট দ্রুত খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলের ওপর পড়তে পারে। সংশ্লিষ্ট কৃষক, কৃষি উত্পাদন, প্রক্রিয়াজাত প্ল্যান্ট, পরিবহন, খুচরা বিক্রেতা এবং আরো বহু কিছুর ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে।’ সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইস্যুটি খাবারের সংকট নিয়ে নয়, বরং ভাইরাস মোকাবিলায় দুনিয়া জুড়ে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ সংক্রান্ত। সীমান্ত বন্ধ, চলাচল নিয়ন্ত্রণ, জাহাজ ও আকাশ পরিবহনে বাধার কারণে খাদ্য উত্পাদন ও আন্তর্জাতিকভাবে তা পরিবহনের কাজ কঠিন করে তুলেছে। এতে করে বিভিন্ন দেশের সামান্য বিকল্প কিছু খাবারের উত্সও হুমকির মুখে পড়েছে।
গত ২৫ মার্চ জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার তরফে বলা হয়, মহামারির কারণে এয়ারলাইন্সগুলো হাজার হাজার বিমান ফেলে রেখেছে আর বন্ধ রয়েছে শত শত বন্দর। ফলে আটকা পড়ে আছে খাবার, ওষুধ ও অন্য পণ্য বোঝাই শত শত কনটেইনার।
গত মাসে জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা কমিটির (সিএফএস) এক প্রতিবেদনে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়, বিশ্ব জুড়ে খাদ্য সরবরাহের ওপর অনিশ্চয়তা জোরালো হওয়ায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হবে দরিদ্র মানুষেরা।
সম্ভাব্য খাদ্য বিপর্যয় নিয়ে এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা। নেসলে, ইউনিলিভারের মতো বিভিন্ন কোম্পানি, রাজনীতিবিদ ও বিজ্ঞানীদের তরফে বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে লেখা এক খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘কোভিড মহামারি বিশ্ব জুড়ে খাদ্য ও মানবিক সংকটে পরিণত হওয়ার আগে সরকার, ব্যবসায়ী, নাগরিক সমাজ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দ্রুত এবং সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত’।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। বিশ্ব জুড়ে এরই মধ্যে এই ভাইরাসটি ১৬ লাখেরও বেশি মানুষকে আক্রান্ত করেছে। আর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ১ লাখেরও বেশি মানুষের। ভাইরাসটিকে মহামারি আখ্যা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।