
দ্য থার্ড আই ডেস্ক: কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সমগ্র দেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। মারন এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বৃহৎ গণতান্ত্রিক এই দেশে বর্তমানে শুধুই যে করোনা শিকার হয়ে মারা গেছেন তা নয়। লকডাউনের পর থেকেও বিভিন্নভাবে তিন শতাধিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে এক রিপোর্টে। লকডাউন করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচাতে সক্ষম হলেও সেই লকডাউনের জেরে বিভিন্নভাবে আত্মঘাতী হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ।
পাবলিক ইন্টারেস্ট টেকনোলজিস্ট তেজেশ জিএন, সমাজকর্মী কণিকা শর্মা এবং অধ্যাপক আমন ১৯ মার্চ থেকে ২ মে তারিখ পর্যন্ত একটি সমীক্ষা চালান। আর মর্মস্পর্শী এই তথ্য প্রকাশ পায়, কমপক্ষে ৩৩৮ জন লকডাউনে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
বর্তমান সময়ে দেশজুড়ে বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত একাধিক খবরের কাগজ, ওয়েব পোর্টাল এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদির উপর ভিত্তি করেই গবেষণাটি চালানো হয়। তাই মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ সমস্ত মৃতের তথ্য মিডিয়ায় প্রকাশ হয় নি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, একাকীত্বের কারণে বা কোভিড-১৯ পজ়িটিভ হলে কী হবে, সেই উদ্বেগে ৮০ জন আত্মঘাতী হয়েছেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে ৫১ জন ঘরে ফিরতে না পেরে হতাশায় নিজেদেরকে শেষ করে দিয়েছেন। নেশাগ্রস্তরা নেশার অভাবে আত্মঘাতী হয়েছেন ৪৫ জন। আর্থিক অনটনে খেতে না পেয়ে ৩৬ জন আত্মহত্যা করেছেন।
ওই গবেষকরা একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, “আফটারশেভ লোশন এবং স্যানিটাইজ়ার ইত্যাদি খেয়ে মারা গেছেন অন্তত ৭ জন। একটা বড় সংখ্যক শ্রমিক বাড়ি ফিরতে না পারার হতাশায়, খাদ্যের অভাবে, এছাড়াও হেঁটে বা সাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে ২৪ জন শ্রমিকের প্রাণ গেছে। অনেকে সংক্রমণের ভয়ে আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন।”
ভিড় সামলাতে গিয়ে আক্রমণের শিকার হয়ে, পড়ে প্রাণ হারান ১১ জন পুলিশকর্মী। চলমান লকডাউনের সময় ঘটা বিভিন্ন অপরাধে এবং পুলিশের ভিড় সামলানোর আক্রমণে প্রাণ গেছে ১২ জনের। আর সবচেয়ে দুঃখজনক হল, লকডাউনে যোগাযোগের অভাবে চিকিৎসা না পেয়ে ৩৮ জন মারা গেছেন।
জিন্দাল গ্লোবাল স্কুল অফ ল-এর সহ অধ্যাপক আমন বলেন, “আমরা আরও ৪১টি আত্মহত্যার খবর পেয়েছি, যেগুলির কারণ পরিস্কার নয়। এমনও সন্দেজনক আত্মহত্যার ঘটনা সামনে এসেছে যা করোনায় নাকি অন্য কোন কারণে তা স্পষ্ট নয়।”
তিনি আরও বলেন, লকডাউনের মাঝে দেশে এরকম অসংখ্য মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে যা মিডিয়া পর্যন্ত পৌঁছায়নি। এটা কেবলমাত্র মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে পাওয়া পরিসংখ্যান। পরিসংখ্যানটি সম্পূর্ণ নয় কারণ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।