বাপি আকুঞ্জি , কলকাতা : আমফানের কবল থেকে রক্ষা পায়নি সুন্দরবন। এর আগেও সুন্দরবন সাক্ষী থেকেছে ২০০৯ সালে আইলার করাল গ্রাস, ২০১৯ এর বুলবুলের তাণ্ডবের। কিন্তু গত ২০ মে আমফানের বিষাক্ত ছোবল সুন্দরবনকে তছনছ করে দিয়েছে।
সুন্দরবনের আয়লা, বুলবুল ও আমফান বিধ্বস্ত নোনা মাটিতেই প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালে সেচ্ছাসেবী সংগঠন নব দিগন্ত। এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে সাধারণের মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
লকডাউনের প্রথম দিন থেকে নব দিগন্ত রাজ্যের ২৩ জেলায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছে। সাথে সাথে আমফানের প্রথম দিন থেকে সুন্দরবনের মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি।।
গত ৩১ শে মে রবিবার সংগঠনটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় আমফান ত্রাণ বিলি ও বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবির। এই চিকিৎসা শিবিরে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় – ওয়েস্টবেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম, শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ, অগ্নিভ ফাউন্ডেশন , জলু কেয়ারস এর মত স্বনামধন্য সমাজসেবী প্রতিষ্ঠানগুলো । এই চিকিৎসা শিবিরে বিশেষভাবে সহযোগিতা করেছেন স্বনামধন্য চিকিৎসক ডঃ কৌশিক চাকী।
এদিন নব দিগন্তের হেড অফিস থেকে চিকিৎসা শিবিরের সাথে সাথে ত্রাণ বিলি করা হয় – সন্দেশখালি, মিনাখাঁ, ন্যাজাট থানার আমফান বিধ্বস্ত অসহায় মানুষদের। এদিন ঝড় বৃষ্টির সাথে রাজনৈতিক সমস্যায় পথ অবরুদ্ধ হয় বাসন্তী হাইওয়ে, সব বাধা পেরিয়ে কলকাতা থেকে শুভশ্রীর তত্ত্ববধানে ১০ জনের একটি মেডিকেল টিম চলে আসে সন্দেশখালি থানার অন্তর্গত নব দিগন্তের হেড অফিসে খাস শাঁকদহ গ্রামে। এই চিকিৎসা শিবির বিকেল চারটে পর্যন্ত চলে। এখানে ৫০০রোগী দেখা হয় এদিন শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে। প্রত্যেক রোগীকে বিনামূল্যে ঔষধ ও মাক্স দেয়া হয়।এছাড়াও এদিন আমফান বিধ্বস্ত ও লকডাউনের কারণে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া প্রায় ২০০ অসহায় মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয় চাল, ডাল, আলু, সোয়াবিন, লবণ ও সরিষার তেল পরিপূর্ণ একটি করে খাদ্যের প্যাকেট। এবং শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হয় দুধের প্যাকেট। এসব ছাড়াও এদিন ১৫০টি ত্রিপল তুলে দেওয়া হয় অগ্নিভ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ঝড়ে যাদের ঘরের চাল উড়ে গিয়েছে এমন মানুষদের। এগুলো ছাড়াও এদিন গ্রামের মা-বোনদের হাতে ২৫০টি স্যানিটারি নাপকিন এর প্যাকেট তুলে দেওয়া হয় বলে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফ থেকে বলা হয়।