সোমনাথ দত্ত, মালবাজার: কিছু সাধারণ মানুষের অমানবিকতায় বনের পশুপাখি ক্রমাগত বিপন্ন হয়ে পড়ছে। কিছু মানুষের ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের প্যাকেটজাত খাদ্যসামগ্রী, স্যানেটারি ন্যাপকিন সহ অন্যান্য বস্তু ক্ষুধার তাড়নায় খেয়ে নিচ্ছে বনের পশুপাখি এবং এতেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে তারা। এমন দৃশ্য দেখা গেল মেটেলি ব্লকের চালসা সংলগ্ন খড়িয়ারবন্দর বনাঞ্চল এলাকায়।
গত কয়েকদিন ধরে এই এলাকায় ঘোরাফেরা করছে একটি বুনো হাতির দল, সাথে শাবকও রয়েছে। এই বনাঞ্চলের টিয়াবন এলাকা চালসা ও মঙ্গলবাড়ি এলাকা হলো অঘোষিত ডাম্পিং গ্রাউন্ড। প্রতিদিন এই বনাঞ্চল এলাকায় এসে জমা হয় বাজারের সমস্ত আবর্জনা। প্লাস্টিকের বড় বড় বস্তায় বাজারের জৈব পচা সবজি, তেলেভাজার পচা বর্জ্য জমা হয় এখানে। শুধু তাই নয়, ব্যবহার করা স্যানেটারি ন্যাপকিন প্যাকেট করে ফেলা হয়।
দেখা গেছে, বনের হাতি লবনাক্ত স্বাদের এসব বর্জ্যসামগ্রী প্লাস্টিকের প্যাকেট সমেত খাচ্ছে। পরে মলের সাথে সেই অপাচ্য প্লাস্টিকের দ্রব্য বেরিয়ে আসছে। এইদৃশ্য এই প্রথম নয়। এর আগেও দেখা গেছে।
এই নিয়ে উদ্বিগ্ন এলাকার পরিবেশ প্রেমী রোহিত পাশি, মানবেন্দ্র দে সরকার, অনির্বান মজুমদার প্রমুখ। তারা জানান, গত কয়েকদিন ধরে দেখছি একটা বুনো হাতির দল এই এলাকায় ঘোরাফেরা করছে। পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে দেখি হাতির মলে রয়েছে প্লাস্টিক ও স্যানেটারি ন্যাপকিন। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের। এর আগে ময়নাতদন্তের সময় দেখা গেছে হাতির পেটে প্লাস্টিকের সামগ্রী। অবিলম্বে এখানে বর্জ্য পদার্থ ফেলা বন্ধ হওয়া উচিত।
বিশিষ্ট পশু চিকিৎসক অপুর্ব চক্রবর্তী জানান, প্লাস্টিকের প্যাকেট হাতি বা গবাদিপশুর পেটে গেলে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। বেশি পরিমাণে খেলে প্লাস্টিকের সামগ্রীর রং ও প্লাস্টিক মৃত্যুর কারন হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
এনিয়ে মাটিয়ালি- বাতাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দীপক ভুজেল জানান, আমরা বিডিও ও বিএলআরও-কে নিয়ে একটা ডাম্পিং গ্রাউন্ড খোজার চেষ্টা করছি। কিছুদিনের মধ্যে পাওয়া যাবে। তবে মানুষকে সচেতন হওয়া উচিত। বনাঞ্চল সংলগ্ন এলাকায় এভাবে বর্জ্য ফেলা উচিত নয়, এতে পরিবেশের ক্ষতি।
এই নিয়ে বনদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, এটা অনুচিত কাজ। যারা ফেলছে তারা অনুচিত কাজ করছে। আমরা দ্রুত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।
তবে পরিবেশ প্রেমীদের দাবি অবিলম্বে বনাঞ্চলে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।