নিউজপিডিয়া ডেস্ক: মানুষের নুন্যতম বাঁচার জন্য চাই খাবার আর লকডাউন চলাকালীন বারবার অভিযোগ উঠেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঠিকমত খাবার দিচ্ছে না সরকার। আর,খাবার না দেওয়ায় ওই শ্রমিকরা পরিবার নিয়ে বিপাকে পরেছে। ট্রেন পরিষেবা বন্ধ আর সেই কারনে শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে কেউ বা হেঁটে কেউ বা সাইকেলে চেপে বাড়ি ফিরছে। অনেকে আছেন সেটাও করতে পারছে না। তাই বাধ্য হয়ে কোথাও বা থানার সামনে আবার কোথাও বা রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকরা।
লকডাউনে আটকে পড়া সেই শ্রমিকরা বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন। বিনিময়ে তাদের কপালে জুটল কাঁদানে গ্যাস আর পুলিশের লাঠি। তার জেরে পরিযায়ী শ্রমিক বনাম পুলিশ সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে উঠল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের খাসতালুক গুজরাতের সুরাট। পুলিশের নির্বিচারে লাঠিপেটায় আহত হয়েছেন বহু পরিযায়ী শ্রমিক। বিজেপি শাসিত রাজ্যের পুলিশের এমন ‘সংবেদনশীলতা ও মানবিকতা’নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।
জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই লকডাউনের কারণে গুজরাতের সুরাট সহ বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়া শ্রমিকরা বাড়ি ফেরা নিয়ে অশান্তি হচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত’ যুদ্ধ ঘোষণা করেছে অমিত শাহের রাজ্যের পুলিশ। কয়েক দিন আগেই পুলিশ বনাম শ্রমিক সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে উঠেছিল সুরাত। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার ফের উত্তাল হয়ে উঠল সুরাত।
শনিবার সকালে বাড়ি ফিরে যাওয়ার দাবি নিয়ে সুরাতের মোরা গ্রামে রাস্তায় নেমেছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। আর বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে শান্ত করার পরিবর্তে রণংদেহী মূর্তি ধারণ করে আসরে নেমে পড়ে পুলিশ। অসহায় শ্রমিকদের পিটিয়ে হাতের সুখ মেটানোয় নেমে পড়েন খাকি উর্দিধারীরা। নির্বিচারে লাঠিপেটা করা হয়। কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটানো হয়।
জানা গেছে, বাংলা, ওডিশা থেকেও বহু কর্মী গিয়ে কাজ করে সেখানে। কিন্তু লকডাউনের কারণে বহু কর্মীর কাজ হারিয়েছে সেখানে। ফলে যে কোনও উপায়ে তাঁরা বাড়ি ফিরতে চায়। এই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পাঠাতে বিশেষ ট্রেনেরও বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ পরীক্ষা না করে কারোকে রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া যাবে না বলে সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে ওডিশা হাইকোর্ট।
তার পরেই বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের জন্য যে চালু করা তিনটি ট্রেন বাতিল করে ওডিশা সরকার। এই পরিস্থিতিতে সেখানে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকরা রীতিমত আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। আর আতঙ্কিত হয়ে পড়লে এদিন অন্যান্য পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে বিক্ষোভে সামিল হন ওরাও। শনিবার সকাল থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ। বারবার পুলিশের তরফে শ্রমিকদের ফিরে যাওয়ার কথা বললেও কেউ শোনেনি বলে অভিযোগ। এরপরেও লাঠিচার্জ করা হয় বলে অভিযোগ।