নিউজপিডিয়া আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, জো বাইডেনকে নিশ্চিতভাবে দেশের প্রেসিডেন্ট বলা যায়। তাঁকে বলা হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট। তবে সে দেশের আইন অনুযায়ী ক্ষমতা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ নিয়ম মানা হয়। কিন্তু এবারের ভোটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মামলা করায় বিষয়টি কিছুটা জটিল হয়েছে। আমেরিকার সংবিধানে বলা হয়েছে, জানুয়ারি মাসের ২০ তারিখ নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ গ্রহণ করবেন। ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করার কথা। নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টকে শপথবাক্য পাঠ করান দেশের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। নিয়ম অনুযায়ী যিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেন তিনি একটি ট্রানজিশন টিম গঠন করেন। সেই টিম আগের সরকারের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেয়।
জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা জিএসএ নতুন সরকারকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার কাজ করে। জিএসসি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর এ জন্য সম্ভাব্য বিজয়ী প্রার্থীকে একটি চিঠি দেয়। এর অর্থ হচ্ছে বর্তমান প্রশাসন নতুন বিজয়ীকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিচ্ছে ও দায়িত্ব হস্তান্তর করবে। আগের দফার নির্বাচনে ২০১৬ সালে জিএসএ নির্বাচনের ফলাফলের পরের দিন হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু করলেও এবার এখনও পর্যন্ত জো বাইডেনকে কোনও চিঠি দেয়নি। জিএসএ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর এমিলি মারফি জো বাইডেনকে এখনও স্বীকৃতি দেননি। ২০০০ সালে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে যে আইনগত লড়াই হয়েছিল সে বিষয় উল্লেখ করে এমিলি মারফি জানিয়েছেন, এবার নির্বাচনে কে বিজয়ী হয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নির্বাচনের ফলাফল গণনা হওয়ার মাঝামাঝি সময় থেকেই ট্রাম্প দাবি করে আসছেন, ভোটের গণনায় জালিয়াতি হয়েছে। যেসব অঙ্গরাজ্যের জো বাইডেন কম ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন বা কম ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে সেসব অঙ্গরাজ্যের ক্ষেত্রে ভোট জালিয়াতির মামলা করেছেন ট্রাম্প। রাজ্যগুলি হচ্ছে মিশিগান, অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, পেনসিলভেনিয়া, নেভাদা, উইসকনসিন।
তবে আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, মামলার ফলে ভোটের ফলাফল বদল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ৪ নভেম্বর ট্রাম্প সুপ্রিমকোর্টে ভোট জালিয়াতির ব্যাপারে মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন। তবে এ ব্যাপারে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া রয়েছে। যেমন, এ ব্যাপারে মামলা করতে হলে প্রথমে রাজ্যের আদালতে করতে হবে। তারপর সেখানকার আদালত যথেষ্ট প্রমাণ পেলে এবং জরুরি মনে করলে সেই মামলার পক্ষে রায় দিতে পারে এবং নতুন করে ভোট গণনার নির্দেশ দিতে পারে। তবে সুপ্রিমকোর্ট এ বিষয়ে যে কোনও সময়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে এবং সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দেবে সেটাই চূড়ান্ত মানা হবে।
তবে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলে ট্রাম্প তাঁকে অভিনন্দন না জানালেও এ বিষয়ে তাঁর কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ক্ষমতা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে পূর্বতন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে কিছু দায়িত্ব পালন করতেই হবে।