বাপি আকুঞ্জি, বারাসাত: এবছর উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হয়েছে গত ১৭ জুলাই। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরেও উচ্চমাধ্যমিকে উল্লেখযোগ্য জায়গা করে নিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা। তাদের মধ্যে সব থেকে উল্লেখযোগ্য সুপর্ণা খাতুন, উচ্চ মাধ্যমিকে সারা রাজ্যের মধ্যে পঞ্চম স্থানাধিকারী। বেড়িগোপালপুর আদর্শ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুপর্ণা বরাবরই মেধাবী হিসেবেই পরিচিত স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকার কাছে। এবারে উচ্চমাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নম্বর পাশের ৫০০ মধ্যে ৪৯৫।
উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত ছোঁয়া গাইঘাটার সুবিদপুর গ্রামের দীন দরিদ্র অসহায় পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক চাষী আলি হোসেন সরদারের একমাত্র কন্যা। ভাই অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। নিজের মাত্র ৯ কাঠা জমি, অন্যের জমিতে কাজ করে কোনো রকমে সংসার চলে। জব কার্ডের কাজ করে বাবা মা দুজনই। সংসারের অভাব অনটন ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় বাঁধা হতে দেয়নি মা নারগিস সরদার। পড়াশুনার পাশাপাশি মায়ের সঙ্গে কখনো সেলাইয়ের কাজ করেন, কখনো আবার রান্নার সময় মাকে সাহায্য করা তারপর পড়াশোনা। এই সাফল্যে সে অভিভূত, তার স্বপ্ন ভূগোল নিয়ে গবেষণা করা। কিন্তু প্রশ্ন অর্থের অভাবে কতদূর যেতে পারবে এই মেধাবী কৃতী ছাত্রী?
গতকাল তার বাড়িতে শুভেচ্ছা ও সংবর্ধনা জানাতে এসেছিলেন সিরাত ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সম্পাদক ও শিক্ষক আবু সিদ্দিক খান। সিরাত পরিবারের পক্ষ থেকে তার পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন সিরাতের রাজ্য সম্পাদক। এদিন শিক্ষক আবু সিদ্দিক খান সিরাত পরিবারের পক্ষ থেকে সুপর্ণার হাতে তুলে দিলেন শংসাপত্র , স্মারক ,বই , কলম সহ একগুচ্ছ উপহার সামগ্রী।
এদিন আবু সিদ্দিক খান নিউজ পিডিয়ার সাংবাদিককে বলেন, ” আমি কষ্ট করেই পড়াশোনা করেছি। কেননা আমার বাড়ি সন্দেশখালির প্রত্যন্ত এলাকায়। এই কষ্ট আমি বুঝি। আজ সুপর্ণা যেভাবে অসহায় পরিবারের বাড়ি থেকে উঠে এসেছে এটা খুবই প্রশংসনীয়। আমি চাই , সমাজের সুহৃদয় মানুষেরা সুপর্ণার পাশে এসে দাঁড়াক উচ্চশিক্ষার আর্থিক সহায়তার জন্য”
এদিন সুবিদপুর সুপর্ণার বাড়িতে সংবর্ধনা দিতে হাজির ছিলেন অল ইন্ডিয়া সুন্নাত উল জামাতের সর্বভারতীয় সম্পাদক মুফতি আব্দুল মাতিন , বেঙ্গল এডুকেশান ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের রাজ্য সম্পাদক শিক্ষক সাজাহান মণ্ডল সহ সাংবাদিক আহসানুল হক ও আজহার উদ্দিন প্রমুখ।