নিউজপিডিয়া ডেস্ক: গোটা রাতের কর্মকাণ্ডের পরে সকালে হুঁশ ফিরতে নিজেই থানায় ছুটে গিয়েছিলেন পূজারী। সারা শরীরে রক্ত মাখা। দু’হাত থরথর করে কাঁপছে। পুলিশের সামনে নিজের মুখেই স্বীকার করেন, “ভগবান স্বপ্ন দিয়েছিলেন। মানুষ বলি দিলেই করোনা পালাবে। একজনের মাথা কেটে উৎসর্গ করেছি।”
ওড়িশার কটকের নরসিংপুরে এই ঘটনা ঘটেছে বুধবার রাতে। সকাল হতেই মন্দিরের সামনে বহু মানুষের ভিড় জমে যায়। আতঙ্কে চিৎকার, চেঁচামেচি শুরু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মন্দিরের বাইরে তখন বীভৎস দৃশ্য। চৌকাঠের বাইরে পড়ে রয়েছে এক ব্যক্তির ধড় থেকে বাকি দেহ। আর ভেতরে গড়াগড়ি যাচ্ছে মাথাটা। রক্তে ভেসে গেছে চারদিক। ছেঁড়াফাটা জামাকাপড় ছড়িয়ে রয়েছে চারদিকে। সেগুলির উপরেও রক্তের কালচে ছোপ। রক্তমাখা একটি কুঠারও উদ্ধার হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই কুঠার দিয়েই খুন করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে।
অভিযুক্ত পূজারীর নাম সংসারি ওঝা। বয়স ৭২ বছর। নরসিংহপুরেরই একটি দেবী মন্দিরের বহুকালের পূজারী। এলাকায় তাঁর ভালোই নামডাক আছে। খুন করা হয়েছে যে ব্যক্তিকে তিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা। নাম সরোজ কুমার প্রধান। স্থানীয়দের দাবি, এলাকারই একটি আমবাগানের মালিকানা নিয়ে ওই পুরোহিতের সঙ্গে সরোজের ঝামেলা চলছিল। তাছাড়াও নানা কারণে দু’জনের বাগবিতণ্ডা লেগেই থাকত। সেই অশান্তির জেরেই সরোজকে খুন করা হয়েছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
অভিযুক্ত পূজারীর যদিও দাবি, অশান্তির কারণে নয় বরং তাঁর সাধনার জন্যই উৎসর্গ করা হয়েছে সরোজকে। এই হত্যাকে অপরাধ বলে মানতে রাজি নন তিনি। পুরোহিতের দাবি, করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক দূর করতে তিনি নাকি নানারকম পুজো করেছিলেন। তখনই নাকি ভগবান তাঁকে স্বপ্ন দিয়ে বলেন মানুষ বলি দিলেই ভাইরাস পালাবে। সেই কারণেই সরোজের মাথা কেটে দেবীকে উৎসর্গ করেছেন তিনি।
ডিআইজি আশিস কুমার বলেছেন,”ঘটনাস্থল ভালভাবে পরিদর্শন করে বোঝা গেছে, খুনের আগে ওই পূজারীর সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি হয় সরোজের। ছেঁড়াফাটা জামাকাপড়ের টুকরোও পাওয়া গেছে। ঘটনার সময় ওই পুরোহিত নেশাগ্রস্ত ছিলেন। সকালে হুঁশ ফিরতেই বুঝতে পারেন কী সাঙ্ঘাতিক ঘটনা তিনি ঘটিয়েছেন। পূজারীকে জেরা করা হচ্ছে। কুঠারটিও ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। অত রাতে মন্দিরের ভেতরে কুঠার নিয়ে কী করছিলেন, তার সদুত্তর পূজারী দিতে পারেননি।”