রবিউল হোসেন: লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় সীমানা নির্ধারণ নিয়ে ভারত চীন সীমান্ত বিরোধ এখন তুঙ্গে। বিরোধ এতটাই চরম আকার ধারণ করে যে গত ১৫ জুন বর্বর চীনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা প্রাণ হারান। আর এরপরেই নড়ে চড়ে বসে ভারত সরকার। বসে নেই চীনও। তারাও নানান সময় নানান হুমকি মূলক বিবৃতি দিয়েই যাচ্ছে। তবে এবার লাদাখ সীমান্তে ভারত চীন বিরোধে ভারতের পাশে থেকে চীনের হুমকির মোকাবিলা করার প্রতিশ্রুতি দিল যুক্তরাষ্ট্র। তার ফলস্বরূপ দেশটি ইউরোপ থেকে তাদের বেশিরভাগ সেনা প্রত্যাহার করে তা এশিয়াতে মোতায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এক সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানান, জার্মানিতে মোতায়েন করা ৫২ হাজার সেনার মধ্যে ২৭ হাজারকেই আপাতত এশিয়াতে নিয়ে আসা হচ্ছে।
পম্পেও জানান, এশিয়ার বিভিন্ন দেশে চিন বরাবর তার আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে। বিশেষ করে ভারত, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ চীন সাগর, ইন্দোনেশিয়া বা ফিলিপাইনের মতো দেশে চীনের আগ্রাসন দেখে তারা যথেষ্ট চিন্তিত। তাই জার্মানি থেকে সেনা প্রত্যাহারের কারণ। তিনি আরও জানান, চীনের সেনার উপস্থিতি লক্ষ্য করে যেখানে যেমন প্রয়োজন সেখানে সেই হারে এই সেনাদল মোতায়েন করা হবে। এবং সমগ্র প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হবে উক্ত দেশটির সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে। আর এই গোটা কাজটি হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মদতে।
পম্পেও জানান, তার দেশ সবসময় চীনের আগ্রাসী ভূমিকায় চিন্তিত। তাই তারা এই সেনা মোতায়েনর মাধ্যমে নিচ্ছিত হতে চায় যে, এশিয়ার দেশগুলো যে কোনো সময় চীনের লাল বাহিনী মোকাবিলায় প্রস্তুত ও সক্ষম কিনা?
তবে যুক্তরাষ্টের এহেন মন্তব্য এই প্রথম নয়। গত সপ্তাহেও তারা ভারতের নিরস্ত্র সেনার উপর চিনের হামলা, দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো সহ একাধিক ইস্যুতে চীনের সমালোচনা করেছিল। একই সঙ্গে পম্পেও চীনের কমিউনিস্ট ক্ষমতাসীন সরকারকে দুরাচারী বলে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, ভারত সীমান্ত, হংকং বা দক্ষিণ চীন সাগর যেখানেই লাল বাহিনী তাণ্ডব চালিয়েছে তার সবটাই হয়েছে কমিউনিস্ট পার্টির মদতে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ই জুন চিনা বাহিনীর সাথে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়। আহত হয় কমপক্ষে ৭৬ জন। ওই ঘটনার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়, চীন যেভাবে গালওয়ান উপত্যকায় সেনা মোতায়েন করছে তাতে তারা উভয় দেশের স্বাক্ষরিত ৬ জুনের চুক্তি মানছে না। চুক্তিতে দুই দেশের সেনার পদ মর্যাদার আধিকারিকদের উপস্থিতিতে ঠিক করা হয়েছিল, নিয়ন্ত্রন রেখায় অবস্থানরত তাদের সেনা ঘাঁটিটি চীন সরিয়ে নিবে। কিন্তু চীন তা অনুসরণ করেনি।