রবিউল হোসেন: মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বড় ধরনের খাদ্য সংকটের দ্বারপ্রান্তে বিশ্ব। বিগত ৫০ বছরে এমন সংকট কেউ দেখেনি। তাই আসন্ন এই খাদ্য সংকটের বিষয়ে সর্তক করে দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশ্ব নেতাদের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, দরিদ্রতা মোকাবেলায় জরুরি ভিত্তিতে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত। নয় তো করোনার কারণে সৃষ্ট মন্দায় দরিদ্রদের মৌলিক পুষ্টির চাহিদা নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে।
তিনি বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়া হলে আসন্ন বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের কারণে লাখ লাখ শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে। এই প্রভাব এড়াতে চাইলে এখনই সেটা নিয়ন্ত্রণের জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, যেসব দেশে প্রচুর খাদ্যশস্য আছে সেখানেও খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলা ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। করোনার প্রভাবে বিশ্বের প্রায় ৫ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মুখে পড়তে পারে। এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে যেসব শিশু পুষ্টির অভাবের শিকার হবে তাদের মধ্যে তা সারাজীবন থাকবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, বর্তমানে বিশ্বের প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজনের শারীরিক বৃদ্ধি পুষ্টির অভাবে পাঁচ বছরের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায়। করোনার কারণে দারিদ্র্যের হার বেড়ে গেলে কয়েক লাখ শিশুকে একই পরিণতি ভোগ করতে হবে। এ সময় খাদ্য সংকট এড়াতে ও খাদ্য ব্যবস্থা মেরামত করতে তিন দফা পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। এর মধ্যে বিপর্যয় মোকাবেলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে সহায়তা পাঠানোর ব্যাপারে মনোনিবেশ করা ও সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলাকে অগ্রাধিকার দেয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেন গুতেরেস।
এছাড়া যেসব শিশু স্কুল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে খাবার পাচ্ছে না, যেমন- অপুষ্টিতে ভোগা শিশু, গর্ভবতী নারী ও যেসব মায়েরা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান তাদের সামাজিক সুরক্ষা জোরদার করা। যেন তারা পর্যাপ্ত পুষ্টি পেতে পারে। পাশাপাশি বিশ্বকে করোনার প্রভাব থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য স্বাস্থ্যকর ও পরিবেশগতভাবে টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করা।