নিজস্ব সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: মঙ্গলবার সামশেরগঞ্জের এলাকাবাসী মদ্যপান, জুয়া, লটারির বিরুদ্ধে এলাকার মানুষকে সচেতন করেন। সঙ্গে এলাকায় নেশা ও অপকর্ম করলে জরিমানা ধার্য্য করে হ্যাণ্ডবিল এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তা ছড়িয়েও দিলেন। আনলক পর্বে রমরমিয়ে চলছে মদ, জুয়ার আসর। এলাকায় বেড়েই চলেছে অসামাজিক কার্যকলাপ। তাই এবার মদ, জুয়া, লটারি, অবৈধ কাজকর্ম সহ অসামাজিক কার্যকলাপ রুখতে অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করে স্থানীয় গ্রামবাসীরা।
এবিষয়ে জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখবো।
জানা যায়, সামশেরগঞ্জের অদ্বৈতনগরের গ্রাম সংস্কার কমিটি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেশা ও অপকর্মের বিরুদ্ধে সচেতনতার প্রচার চালায়। নিয়ম ভঙ্গ এবং অপকর্মে জড়িত থাকলে শাস্তির ও জরিমানার বিধানও শুনিয়েছে কমিটি। এমনকি এই অপকর্মে জড়িতদের ধরিয়ে দিতে পারলে মিলবে পুরস্কারও। ফলে, এই অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করে কার্যত সকলের নজরে এসেছে পিছিয়ে পড়া এই গ্রামটি।
অপরাধমুক্ত সমাজ গড়তে গ্রামবাসীদের অভিনব উদ্যোগকে খুশি এলাকারবাসী। বিশেষ করে পরিবারের মহিলারা মদ্যপান বন্ধকে স্বাগত জানিয়েছে। কারণ, এই মদ্যপানের ফলে, ঘরে অশান্তি ভোগ করতে হয় বেশি মহিলাদেরই। ঝাড়খণ্ড সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামটিতে প্রায় হাজার পাঁচেক মানুষের বসবাস। শিক্ষা দীক্ষায় তেমন অগ্রগতি হয়নি গ্রামের বাসিন্দাদের। অনেকের মধ্যেই অপরাধ প্রবণতা লক্ষ করা যায়।
সম্প্রতি মদ, জুয়ার আসরে কার্যত অতিষ্ঠিত হয়ে উঠে এলাকাবাসী। মহিলারাও নিরুপায় হয়ে সবকিছু সহ্য করে থাকে। লকডাউনে সেই মাত্রা আরো বেড়ে যায়। তাই সমাজকে মদ ও অপরাধমুক্ত করতে এবং অসামাজিক কার্যকলাপ রুখতে সমাজ সংস্কারক কমিটি গঠন করেন গ্রামের সর্দার ও যুব সমাজ। জারি করা হয় নির্দেশিকা। হ্যান্ডবিল, পোস্টার ও মিছিল করে গ্রামের প্রত্যেকটি বাড়িতে জানিয়ে দেওয়া হয় মদ জুয়ার কুফল ও শাস্তি। এমনকি দোকানে ক্যারাম বোর্ড কিংবা বাগানে বসে গাঁজার আড্ডাও বন্ধ। মদ বিক্রি করলে সাত হাজার ও মদ্যপান করলে দুই হাজার জরিমানা এবং এদের ধরিয়ে দিতে পারলে মিলবে এক হাজার টাকা পুরস্কারও।
সমাজ সংস্কারক কমিটির সভাপতি আজহারুল শেখ বলেন, আমরা মূলত সমাজকে অপরাধমুক্ত করতেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। মদ, জুয়া, লটারি মুক্ত সমাজ গড়তে চাই আমরা। মানুষের সাড়াও পাচ্ছি। এলাকাবাসীর এই প্রচেষ্টা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসা পাচ্ছে।