কলকাতা, ৩০ জুলাই: “তৃণমূলে যারা কর্মচারী তারাই বিজেপিতে যোগ দিয়ে কার্যকর্তা হন”- বুধবার এমনই মন্তব্য শোনা গেলো বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মুখ থেকে। বিজেপি সূত্রের খবর অনুযায়ী, দিল্লিতে সোমবার ভোট প্রস্তুতির বৈঠকে সংসদ অর্জুন সিংহ দলে সম্মান ও স্বাধীনভাবে কাজ করার অভাব নিয়ে কথা তোলেন। সূত্রের দাবি, অর্জুনের নিশানায় ছিলেন দিলীপবাবু এবং তার ঘনিষ্ঠরা। অবশ্য দিলীপ বাবু ও অর্জুন এমন কোনও দ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করেন নি। কিন্তু অর্জুনের অভিযোগ নিয়ে এদিন ফের প্রশ্ন করা হলে দিলীপবাবু বলেন- “কে বলেছেন, সন্মান পাচ্ছেন না? যদি কেউ একথা বলে থাকেন তাহলে বলতে হবে তৃণমূলে কর্মচারী ছিলেন। বিজেপিতে এসেই সন্মান পেয়ে কার্যকর্তা হয়েছেন এবং ভবিষ্যতে যারা আসবেন তারাও সন্মান পাবেন।” অর্জুন সিংহকে উত্তর কলকাতায় পর্যবেক্ষক ও রাজ্যর সহ সভাপতি করা হয়েছে।
বিজেপির একটি সূত্রের দাবি- দলের মধ্যে এতদিন ধরে যে ক্ষোভ জমেছে সোমবার দিল্লির বৈঠকে তারই প্রকাশ করেছেন অর্জুন। মুকুল রায়ের হাত ধরে যার ঘাসফুল থেকে পদ্মফুলে প্রবেশ। সে দিক থেকে রাজনৈতিক পর্যবক্ষকরা কেউ কেউ এই দ্বন্ধে মুকুলের প্রচ্ছন্ন ছায়াও দেখতে পাচ্ছেন। এমন পরিস্থতিতে এ দিন দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুলের বাড়িতে দুপুরের ভোজ আয়োজন রাজনৈতিক শিবিরের চর্চায় উঠে এসেছে। ভোজের টেবিলে যারা ছিলেন তাদের বেশিরভাগ মুকুলের হাত ধরে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসেছেন, সাংসদও হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন হল- সৌমিত্র খান, নিশীথ প্রামাণিক এবং অর্জুন। এছাড়াও ছিলেন স্বপন দাশগুপ্ত, যিনি ইদানিং বাবুলের সঙ্গে মুকুলের পক্ষ নেন এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দরবার করছেন বলে খবর। ভোজের টেবিলে কি নিয়ে কথা হয়েছে সে বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি।
তবে পর্যবেক্ষকদের কাছে দিলীপবাবু বা তার ঘনিষ্ঠদের না থাকার বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। উল্লেখ্য , দিলিপবাবু মঙ্গলবার রাতেই কলকাতায় ফিরেন।
এদিকে মুকুল দিল্লি থেকে হঠাৎ কলকাতা ফিরেই রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করেছেন এবং তিনি বিজেপির প্রতি তার পূর্ণ আস্থার কথা জানান। তার পেছনেও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সক্রিয় ভূমিকা ছিল বলে ওই সূত্রে দাবি করা হচ্ছে।
দিল্লির বিজেপি শিবিরের খবর, কলকাতায় ফিরে মুকুল যাতে সাংবাদিকদের জোর দিয়ে তার বিজেপিতে থাকার কথা বলেন সেই নির্দেশ তার কাছে পাঠানো হয়েছিল ,এমনকি সেই সাংবাদিক বৈঠকের ভিডিও সরাসরি দিল্লিতে পৌঁছে যায়। সূত্রের দাবি মুকুলের দৈনন্দিন গতিবিধি নজরে রাখা হচ্ছে, কারণ মুকুল প্রতিপক্ষ শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ লোকজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন বলে দিল্লির সন্দেহ।
অবশ্য, মুকুল এইসব অভিযোগ ও জল্পনা মানেন নি। তিনি এদিন বলেন – “আমি করো নির্দেশে সাংবাদিক সম্মেলন করিনি। কোনও ভিডিও ক্লিপও কোথাও পাঠানো হয় নি। আর তৃণমূলের কারও সঙ্গেও আমার কথা হয়নি। আবার বলছি সবটাই বানানো গল্পে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”