নিউজপিডিয়া ডেস্ক: আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে লক্ষ্যভেদ করতে কোচবিহারে তরুণ তুর্কীতেই ভরসা করলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের কোচবিহার জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হল প্রাক্তন সাংসদ তথা দলের কার্যকারী সভাপতি পার্থ প্রতিম রায়কে। আজ নেতৃত্বদের সাথে ভার্চুয়াল মিটিংয়ের পর আনুষ্ঠানিক ভাবে কোচবিহার জেলা সভাপতি হিসেবে পার্থ প্রতিম রায়ের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপরেই পার্থ বাবু বলেন, “সবে মাত্র দায়িত্ব পেলাম। এবার সমস্ত জেলা নেতৃত্বের সাথে দেখা করব। তারপর রাজ্য নেতৃত্বের পরমর্শ নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচী তৈরি করবো।”
উত্তরবঙ্গের সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় বিজেপি যে স্থানীয় মানুষের মন পেতে মরিয়া হয়ে নেমেছে তা স্পষ্ট। আর তার মোকাবিলা করতেই লোকসংস্কৃতি নিয়ে কাজ করে আসা দলের তরুণ নেতা পার্থ প্রতিম রায়কেই দায়িত্ব দেওয়া হল বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারনা। কিন্তু জেলায় দলের সব থেকে বড় সমস্যা গোষ্ঠী কোন্দল, সেটা কি এই তরুণ তুর্কির উপড়ে দায়িত্ব অর্পণ করে মেটানো সম্ভব হবে, তা নিয়েই এখন তৃণমূলের অভ্যন্তরে চর্চা শুরু হয়েছে। এক সময় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের হাত ধরে রাজনীতিতে উঠে এসেছেন পার্থ। এমনকি তাঁর সাংসদ হওয়ার পিছনেও রবীন্দ্রনাথ ঘোষের হাত ছিল, সেটাও কমবেশি সকলের জানা। কিন্তু পরবর্তীতে সেই পার্থ প্রতীম রায়ের সাথেই রবীন্দ্রনাথ বাবুর বিরোধ চরমে ওঠে।
শুধু এখানেই শেষ নয়, জেলার প্রায় প্রত্যেক বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে। দিনহাটায় বিধায়ক উদয়ন গুহের বিরোধী একাধিক গোষ্ঠী রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য মীর হুমায়ূন কবীর, তরণী কান্ত বর্মণের মত বেশ কিছু নেতৃত্ব রয়েছেন। যাদের সমর্থন ছাড়া উদয়ন বাবুকে ২১ এর বিধানসভায় জয় পেতে ব্যাপক বেগ পেতে হবে। একইভাবে সিতাই, শীতলখুচি, মাথাভাঙা মেখলিগঞ্জ, তুফানগঞ্জ, নাটাবাড়ি, কোচবিহার উত্তর ও দক্ষিন বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলে এই মুহূর্তের বড় সমস্যা বর্তমান বিধায়ক ও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক গোষ্ঠীর তৎপরতা। অনেকেই দলের অভ্যন্তরে বা বাইরে কোথাও এসব নিয়ে আলোচনা না করলেও সম্প্রতি উদয়ন বাবু কিন্তু দলীয় কর্মীদের সাথে বৈঠকে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন। এমনকি নিজে আর প্রার্থী না হওয়ার কথাও কর্মীদের জানিয়েছিলেন।
এই অবস্থায় দলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে কিভাবে সমস্ত বিরোধ মিটিয়ে দলনেত্রীর আস্থাকে ২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে প্রমান করে দেখাবেন, সেটাই এখন পার্থ প্রতিম রায়ের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করা হচ্ছে।